ঘরে বসে আয় করবো কিভাবে?

ঘরে বসে কিভাবে আয় করা যায় প্রশ্নটি বেশিরভাগ মানুষের মনে নাড়া দেয়। বিশেষত যারা একটু আধুনিক তাদের মনে একটু বেশিই নাড়া দেয়। চাকরিজীবি, বেকার, ছাত্র, গৃহিণী সবার মনকেই বিষয়টি আন্দোলিত করে। ঘরে বসে আয় করা খুব সহজ, অনলাইন ইনকাম কোন ব্যাপারই না এমনটি অনেকেই বলে থাকেন। ইউটিউবে এমন অনেক চটকদারি থাম্বনেইল দেখে ভিডিও দেখেন। আসলে ব্যাপারটি কি? অনলাইন ইনকাম আসলেই কি খুব সহজ? চলুন বিষয়টি বিস্তারিত জানি।

নতুন যে মানুষটি এখনো অনলাইন থেকে ইনকাম করছেন না কিংবা ঘরে বসে আয় করার মতো কোন কাজ করছেন না তাদের আবেগ একটু তাড়াতাড়িই সাড়া দেয়। এরকম চটকদারি বিজ্ঞাপন, ভিডিও, হেডলাইন দেখলেই তাতে সাড়া দেবেন না। ইউটিউবার আপনার উপকার করার জন্য বসে নেই। কোন ফ্রিল্যান্সারের অত সময় নেই আপনার জন্য ভিডিও বানাবেন, আর্টিকেল লিখবেন। তারা তাদের নিজেদের ভিত মজবুত করার জন্য, নিজেদের আয় বাড়ানোর জন্য এই কাজটি করে থাকেন। না, সবাই এরকম না। অনেক ফ্রিল্যান্সার আছেন, ইউটিউবার আছেন যারা অনেক ভালো। ভালো ইউটিউবার এবং ফ্রিল্যান্সাররা আপনার জন্য সত্যিই ভালো কিছু নিয়ে আসে। ভাবছেন কিভাবে বুঝবেন কে ভালো, কে মন্দ, কে প্রতারক। যারা আপনাকে ২ মিনিটে ৫ ডলার ইনকাম করিয়ে দেবেন, যারা এক ক্লিকেই ১০ ডলার ইনকাম করিয়ে দেবেন তারা নি:সন্দেহে আপনার জন্য ভালো নয়। মন রাখবেন ভালো এবং সফল ফ্রিল্যান্সাররা কখনোই আপনাকে ইনকাম করার পদ্ধতি দেখিয়ে লোভ দেখাবেন না। কারণ তিনি ঘরে বসে আয় করার সমস্ত কিছু জানেন। আসলেই বিষয়টি অতটা সহজ না, কঠিনও নয়।

সফল ইউটিউবার কিংবা সফল ফ্রিল্যান্সার আপনাকে শুধু স্কিল ভিত্তিক কাজ দেখাবেন। আপনি তাদের কাছ থেকে ভালো ভালো পরামর্শ দেবেন কিন্তু বলবেন না এই কাজটি করলে মাসে ৩০০ ডলার ইনকাম হবে, সেই কাজটি করলে জীবনে আর কাজ করতে হবে না। এরকম কথা শুধুমাত্র তারাই বলেন যারা তাদের ভিডিও ভিউ করাতে চায়। তাহলে আপনি কি করবেন? হ্যা, সঠিক পথ হলো আপনাকে ঘরে বসে আয় করতে হলে কিছু একটা করতেই হবে। আপনি যে কাজটি পারবেন সেটিই করুন, সেটি ভালোভাবে জানুন, শিখুন এবং কাজের জন্য আবেদন করুন। কাজ না করলে ইনকাম হবে না। অনেকেই আপনাকে লাইভ পিটিসি দেখিয়ে বলবে, কিংবা মাইক্রো জবসের মতো কাজ দেখিয়ে বলবে তার এত টাকা ইনকাম হয়েছে, আপনিও করতে পারেন। চাইলে তার দেয়া লিংকে জয়েন করে আজই কাজ শুরু করতে পারেন।

তিনি আসলে আপনার জন্য কিছু বলছেন না। তার লিংকে জয়েন করলে আপনার লাভ নেই। তিনি আপনাকে ০.০০০২ সেন্ট, ০.২ সেন্ট, ০.৪ সেন্টের কাজ দেখাবেন আসলে এভাবে কাজ করে ১০ ডলার ইনকাম করতে কতদিন সময় লাগে সেটা তিনি আপনাকে কখনোই দেখাবেন না। কারণ এরকম কাজের ক্ষেত্রে কোন কোন সময় ১০ ডলার ইনকাম করতে এক মাসেরও বেশি সময় লাগে। আপনি নিশ্চয় চান না এক মাসে ১০ ডলার বা ৮০০-৯০০ টাকা ইনকাম করতে? তাহলে কি করবেন?

হতাশ হবেন না। আমি নিশ্চয়ই আপনাকে সত্য কথাটিই বলবো। কি করবেন সেটিও বলবো। আপনাকে প্রথমে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি কোন কাজটি ভালো পারেন। যে কোন কাজ। অনলাইনে প্রায় সব ধরণের কাজের জায়গা আছে আপনি চাইলেই আপনি যে কাজে অভিজ্ঞ সে কাজটি করে ইনকাম করতেই পারেন। তবে কখনো চিন্তা করবেন না রাতারাতি হাজার ডলার ইনকাম হয়ে যাবে। যারা হাজার ডলার ইনকাম করেন তারা বছরের পর বছর তপস্যা করে হাজার ডলারে পৌঁছেছেন।

সাধারণত একটি চাকরি করলে আপনি যে কয় টাকা বেতন পান তার চেয়ে কম ধরে রাখতে পারেন। তবে শুরুতেই সেই ইনকামটা নাও হতে পারে কিন্তু সফল হতে হলে আপনাকে লেগে থাকতে হবে, অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে, আরও দক্ষ হতে হবে। অন্যদের সাথে প্রতিযোগিতায় নিজেকে যোগ্য করে তুলতে হবে। তাই আপনি যে কাজটি পারবেন সেটি ভালোভাবে আয়ত্ত্ব করুন। বিভিন্ন মাল্টিটাস্কিং ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস আছে সেখানে একাউন্ট করুন। কাজের জন্য আবেদন করুন। ঘরে বসে কাজ পাওয়ার জন্য নিজের সুন্দর একটি প্রোফাইল এবং পোর্টফোলিও বানান। যদি মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে না চান কিংবা যদি কাজ না পান তবে নিজের স্কিলের মার্কেটিং করেও যোগাড় করতে পারেন ক্লায়েন্ট কিংবা প্রজেক্ট।

আপনি যদি কোনভাবেই বুঝতে না পারেন কি করবেন, কিংবা অনেক চেষ্টা করেও যদি কাজ না পান তবে বুঝতে হবে আপনার দক্ষতার অভাব আছে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই একজন দক্ষ এবং সফল ফ্রিল্যান্সারের সাথে যোগাযোগ করুন। কোন কোন ভালো প্রতিষ্ঠান আছে যারা হাতে কলমে শিক্ষা দিয়ে থাকেন তাদের শরণাপন্ন হতে পারেন। প্রশিক্ষণ নিতে পারেন। তবে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আপনার যদি কোন স্কিল না থাকে তবে যুযোপযোগী একটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে পারেন যা আপনার ক্যারিয়ারের যুদ্ধটা অনেক সহজ করে দেবে। তবে অবশ্যই প্রতারক থেকে সাবধান।

আর্টিকেলটি দীর্ঘায়িত হওয়ায় আজকের মতো এ পর্যন্তই। এ বিষয়ে আরও নতুন নতুন আর্টিকেল এবং পরামর্শ পেতে রিমোট কগের সঙ্গে থাকুন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *