গ্রাফিক্স ডিজাইন এক ধরণের শিল্প। এ শিল্প অন্য সাধারণ হস্তশিল্পের মতো নয় আবার যান্ত্রিক শিল্পও নয়। গ্রাফিক্স ডিজাইন হলো আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্ট আর্ট।
একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার কম্পিউটারে বিভিন্ন সফটওয়্যার ব্যবহার করে তার কল্পনা অনুযায়ী যে চিত্র তৈরি করে তা-ই হলো গ্রাফিক্স ডিজাইন।
Table of Contents
তবে বাণিজ্যিক গ্রাফিক্স ডিজাইনের ক্ষেত্রে শিল্পীর কল্পনার সাথে গ্রাহকের চাহিদা, কাঙ্খিত ভোক্তাশ্রেণী এবং ব্যবসার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ থিম ইত্যাদি বিষয়ের সংযোগ থাকতে হয়। এটি এক ধরণের ডিজিটাল পণ্য।
একটি নান্দনিক গ্রাফিক্স যে কোন ব্যবসাকে তার গ্রাহকের কাছে জোরালোভাবে উপস্থাপন করতে পারে।
সঠিক থিম, উপযুক্ত ও আকর্ষণীয় চিত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের সমন্বয়ে একটি গ্রাফিক্স ডিজাইন শুধু ডিজাইনই নয় বরং ব্যবসার মুখপাত্রের হিসেবে কাজ করে। একটি নতুন ব্যবসার প্রয়োজন এখন ওয়েবে সেগুলি অন্বেষণ করা এবং গ্রাহকদের ব্যস্ততার জন্য প্রচার করা৷
একটি নজরকাড়া গ্রাফিক্স একটি প্রচারণার মৌলিক উপাদান। রিমোট কগ একটি বিষয়ভিত্তিক প্রচারমূলক গ্রাফিক্সের সাথে ব্যবসায়িক প্রচারণা তৈরি করতে উদ্যোক্তাদের উত্সাহিত করে।
কেন প্রচারমূলক গ্রাফিক্স ব্যবসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ?
আপনার ব্যবসা ছোট বা বড় এটা কোন ব্যাপার না। যে কোনো ব্যবসার নিজস্ব একটি ব্যবসায়িক পরিচয় থাকতে হবে। আপনাকে গ্রাহকদের জানাতে হবে যে আপনার একটি ব্যবসা আছে।
এখন, সময়ের সাথে সাথে গ্রাহকরা বেশিরভাগই অনলাইন ভিত্তিক, আপনাকেও গ্রাহক বান্ধব হতে হবে। তাই আজকাল আপনার ব্যবসার অনলাইন প্রচার খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার ব্যবসা যদি অনলাইন ভিত্তিক হয়, তাহলে অনলাইন বিজ্ঞাপন আপনার সেরা বিকল্প। প্রচারমূলক গ্রাফিক্স অনলাইন বিজ্ঞাপনের একটি শক্তিশালী মাধ্যম।
নতুন একটি ব্যবসা শুরু করতে গেলে আপনার ব্যবসার পরিচয় বা ইমেজ ফুটিয়ে তোলা জরুরি। কিভাবে ব্যবসার ব্র্যান্ড ইমেজ তৈরি করবেন? ব্র্যান্ড ইমেজ তৈরি করতে গেলেই আপনার ব্যবসার কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের দিকে প্রথমেই নজর দিতে হবে।
ব্যবসার জন্য প্রথমেই দরকার একটি সুন্দর ব্যবসায়িক নাম। নামের সাথে একটি আকর্ণীয় লোগো ডিজাইন করতে হবে। কোন কাস্টমারের সাথে কথা হলে তাকে আপনার একটি ব্যবসায়িক কার্ডও দিতে হবে।
ব্যবসায়িক কার্ড সুন্দরভাবে ডিজাইন না করলে ব্যবসার ব্র্যান্ড ভ্যালু কমে যাবে। ব্র্যান্ড ইমেজ নষ্ট হবে হবে। সেক্ষেত্রে একজন দক্ষ ও ক্রিয়েটিভ ডিজাইনার দরকার।
শুধু বিভিন্ন ডকুমেন্ট বা মার্কেটিংয়ের উপকরণ দৃষ্টিনন্দন করাই একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনারের কাজ নয়। ব্যবসার প্রমোশনাল গ্রাফিক্স যেন কাস্টমারেরে বোধগম্য হয় সে বিষয়টিও একজন ক্রিয়েটিভ ডিজাইনারের দায়িত্ব।
প্রমোশনাল গ্রাফিক্স হলো এমন ধরণের ডিজাইন যা দেখে একজন কাস্টমার সেবা সম্পর্কে পরিস্কার সব বুঝতে পারবে। নতুন ব্যবসার ক্ষেত্রে এটি তাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোন কারণে কাস্টমার আপনার ব্যবসা সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা পেলে তা আপনার ব্যবসার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
প্রমোশনাল গ্রাফিক্স কিভাবে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে পারে?
প্রমোশনাল ডিজাইনের মূল উদ্দেশ্য হলো সাধারণ মানুষকে ব্যবসার কাস্টমারে রূপান্তরিত করা। সহজ কথায় বলতে গেলে গ্রাফিক্স ডিজাইন হলো এক ধরণের দৃশ্যমান যোগাযোগের মাধ্যম।
ব্যবসার সেবা সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে জানাতে প্রমোশনাল গ্রাফিক্সে ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন তথ্য, সেবা সংক্রান্ত ছবি, বিভিন্ন রং এবং আকার-আকৃতি।
প্রমোশনাল গ্রাফিক্স বিভিন্ন ধরণের হয়। প্রিণ্ট উপযোগী প্রচারণার জন্য গ্রাফিক্স এক ধরণের, ওয়েবে প্রকাশের জন্য অন্য ধরণের ডিজাইন লক্ষ্য করা যায়।
রাস্তার পাশে থাকা বড় বড় বিলবোর্ড কিংবা ডিজিটাল প্রিণ্ট উপযোগী গ্রাফিক্স আরও ভিন্ন রকম হয়। নতুন ব্যবসায়ীদের জানা উচিত প্রমোশনাল গ্রাফিক্স কিভাবে ব্যবসার প্রসার করে। চলুন জেনে নিই:
ব্র্যান্ডিং
ব্যবসার জন্য গ্রাফিক্স ডিজাইন মূলত ব্র্যান্ড স্ট্র্যটেজির ভিত্তিতে করা হয়ে থাকে। মনোগ্রাম বা লোগো একটি ব্যবসার প্রধান পরিচয় বহনকারী গ্রাফিক্স। লোগোর ব্র্যান্ডিংয়ের একটি নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে।
লোগোর আকার, রং এবং থিম ব্যবসার ধরণ এবং স্ট্র্যাটেজিকে উপস্থাপন করে। সে কারণে লোগো ডিজাইনের আগে শতবার ভাবতে হবে লোগোটি কেমন হলে ব্যবসার বিষয়বস্তু তাতে অন্তর্ভূক্ত হবে। বড় বড় আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের লোগো দেখলে সহজেই তা বুঝা যায়।
বিশেষ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন কোম্পানীর লোগো দেখলে সহজেই কাস্টমাররা বুঝতে পারেন লোগোটি কোন ধরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের এবং তারা কি কি সেবা প্রদান করে।
লোগো ডিজাইন অবশ্যই শৈল্পিক সামঞ্জস্য ঠিক রেখে কাস্টমারের মনস্তাত্ত্বিক বিষয় বিবেচনা করে ব্র্যান্ড স্ট্র্যাটেজি অনুযায়ী ডিজাইন করা হয়। তাই ভালো লোগোর দিকে কাস্টমারের দৃষ্টিও বেশি পড়ে।
সেবা সম্পর্কিত তথ্য
প্রমোশনাল গ্রাফিক্সে ছবি, রঙ ও অন্যান্য গ্রাফিক্স উপকরণের পাশাপাশি ব্যবসায়িক বিভিন্ন তথ্য এমনভাবে উপস্থাপন করা যা সেবা সম্পর্কে কাস্টমারদের অবগত করে।
তথ্যগুলো আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করতে পারলে কাস্টমারদের কৌতুহল জাগে। এ অবস্থায় কাস্টমার কোম্পানী বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করে কিংবা সেবাটি খুঁজে নেয়। সুন্দর গ্রাফিক্সের পাশাপাশি আকর্ষণীয় তথ্য না থাকলে সে ধরণের প্রমোশনাল গ্রাফিক্সের গুরুত্ব কম থাকে। গুরুত্ব কমে যাওয়ার ফলে প্রচারণা খাতে প্রচুর ব্যয় করলেও কাঙ্খিত ফলাফল কোনভাবে অর্জন করা সম্ভব হয় না।
স্থান-কাল-পাত্র
খুব নান্দনিক একটি প্রমোশনাল গ্রাফিক্স যথাস্থানে, যথাসময়ে যথার্থ মানুষের কাছে পৌঁছাতে না পারলে তা কেবলই ব্যর্থ চেষ্টা মাত্র। বয়স্ক মানুষের জন্য কোন পণ্যের বিজ্ঞাপন শিশুদের দেখালে কোন ফল আসবে না। গ্রীষ্মকালে সুয়েটারের বিজ্ঞান একেবারেই অর্থহীন।
কৃষিপণ্যের প্রচারণা শহরের চেয়ে গ্রামে বেশি প্রয়োজন। তাই একটি নান্দনিক প্রমোশনাল গ্রাফিক্স প্রচারণার জন্য দরকার সঠিক স্থান-কাল-পাত্র। যথাস্থানে, যথাসময়ে যথার্থ মানুষের কাছে সুন্দর একটি গ্রাফিক্স সম্বলিত প্রচারপত্র পৌঁছাতে পারলে ব্যবসা খুব অল্প সময়েই লাভজনক হবে এবং হবেই।