বিয়ের আগে ফিট থাকবেন কিভাবে?

বিয়ে জীবনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। জীবনের নতুন এক অধ্যায় শুরু হয় বিয়ের পর থেকেই। সে কারণেই বিয়ের জন্য দরকার উপযুক্ত পাত্র এবং পাত্রী। আপাতদৃষ্টে উপযুক্ত বলতেই সবার সামনে যে বিষয়টি উপস্থাপন করা হয় তা হলো পাত্র পাত্রীর বাহ্যিক রূপ, দর্শন এবং শরীরবৃত্তীয় যৌলুশ এবং সক্ষমতা। তাই বিয়ের জন্য আগে থেকে ফিট থাকা একান্তই জরুরি।

বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রেই নতুন এ সম্পর্কে যাওয়ার আগে মনে অনেক সংশয় থাকে। তার প্রথম কারণ শারীরিক ফিটনেস ও রূপ-লাবণ্য। বিশেষত নারীদের ক্ষেত্রে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি লক্ষণীয় হলেও নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং দরকারি। বিয়ে আগে কিভাবে নিজের ফিটনেস বাড়াবেন?

বিয়ের দিন ধার্য হয়ে গেলে বর কনে দুজনের মনের মধ্যে বেড়ে যায় চাপ। বাড়ে কিছু বাড়তি কাজের দায়িত্ব তাই এ সময় কাজের চাপে শরীরের যত্ন নেয়া একেবারেই হয়ে উঠে না। তাই অবশ্যই মনে রাখতে হবে শুধু কাজের চাপ নিয়ে ঘুরে বেড়ালেই হবে না নিজের দিকেও এ সময় একটু বাড়তি যত্ন নিতে হবে। শুধু তাই নয় এসময় নিজের নিয়মিত অভ্যাসগুলোর মধ্যে একটা পরিবর্তন আনা উচিত। কারণ মনের উপর চাপ পড়লে তার শরীরেও প্রভাব ফেলে বিস্তর। তাই এ সময় যে বিষয়গুলো আবশ্যিকভাবে খেয়াল রাখতে হবে:

  • তৈলাক্ত খাবার পরিহার করুন।
  • বেশি বেশি পানি পান করুন।
  • সবজি, ফলমূল বেশি খাওয়ার চেষ্টা করুন।
  • নিয়মিত বাদাম খাওয়ার অভ্যাস করুন।
  • ক্যালরিযুক্ত খাবার বেশি খাওয়ার চেষ্টা করুন।

যদি দিন ঠিক হওয়ার আগে একমাস সময় হাতে থাকে তবে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার বিষয়ে গুরুত্ব দিন। একদিন বেশি খেয়ে ফেললে সমস্যা নেই তবে ভাত ও রুটি কিংবা যে কোন শর্করা জাতীয় খাবার খাদ্য তালিকা থেকে কমিয়ে ফেলুন। চেষ্টা করুন বেশি করে সবুজ শাক সবজি এবং সালাদ খেতে। এ ধরণের খাবার আপনাকে চর্বি থেকে যেমন মুক্তি দেবে তেমনি পুষ্টি ও ক্যালরির যোগানও দেবে সমান হারে।

গাজর, বিট রুট এবং টমেটো ডায়েট ঠিক রাখতে এ সময় আপনার জন্য খুব জরুরি। ত্বকের লাবণ্য বাড়াতেও এগুলো দারুন কাজ করে। বাইরের তেলে ভাজা খাবার খেয়ে বিয়ে আগে শরীর খারাপ করা যাবে না। ডুবো তেলের খাবার একেবারে পরিহার করুন। তবে যদি সারাদিন কাজের প্রয়োজনে বাইরে থাকতে হয় তবে সাথে বাসার তৈরি খাবার কিংবা ট্রাই ফ্রুটস রাখতে পারেন যা আপনাকে পুষ্টি ও ক্যালরি সাপ্লাই দেবে। পেঁপে অনেক গুণমান সম্পন্ন একটি ফল। ত্বকের পুষ্টি বাড়াতে পেঁপে দারুণ কার্যকরী। শুধু তাই নয় খাবার হজমে সহায়তা পরিপাক তন্ত্রের কাজ সহজ করে দেয়। ফলে পেটে পীড়া হওয়ার কোন সম্ভাবনা থাকে না।

যে অভ্যাসগুলো আপনাকে আরও ফিট করতে সহায়তা করবে তার মধ্যে প্রধান হলো ভোরে ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস করুন। প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। সকালে ও বিকেলে হাটার অভ্যাস করুন। অন্তত প্রতিদিন ৩০ মিনিট শরীরচর্চা করুন।

ওজন কমানোর ডায়েট করতে হলে অবশ্যই চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার একদম পরিহার করতে হবে। চায়ের অভ্যাস থাকলে দুধ চায়ের বদলে চিনি ছাড়া বা গ্রীণ টি খেতে পারেন। রাতের বেলায় শর্করা জাতীয় খাবার বা কার্বেোহাইড্রেড যেমন ভাত, ‍রুটি, আলু না খেয়ে প্রোটিন জাতীয় খাবার যেমন ডিম, দুধ, মাছ, মাংস খাওযার চেষ্টা করুন।

বিয়ের আগে রূপচর্চা

বিয়ে ঠিক হয়ে গেলে শুধু শরীরের যত্ন নিলেই হবে না সাথে রূপচর্চাও করতে হবে বুঝে শুনে। আপনার ত্বকের ধরণ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় প্রসাধনী এবং যে কোন প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের লাবণ্যতা ও ‍উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে হবে। এজন্য ত্বকের যত্ন নিতে হবে সতর্কতার সাথে। অনেক ক্ষেত্রেই ভালো করতে হিতে বিপরীত হয়। তাই খুব সতর্কভাবে ত্বকের ধরণ বুঝে যত্ন নিন। ত্বকের লাবণ্যতা আপনার নতুন জীবনে আত্মবিশ্বাস বাড়াবে বহুগুণ।

বিশেষত মেয়েদের ক্ষেত্রে বিয়ের আগে একটু বেশিই দুশ্চিন্তা পোহাতে হয়। রাত জাগা, শপিং করা ইত্যাদি ইত্যাদি করতে শরীর থেকে প্রচুর ক্যালরি, আয়রন এবং ভিটামিন খরচ হয়। তাই এ সময় রাতে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, আয়রন ট্যাবলেট খাওয়া ‍উচিত। তবে অবশ্যই তা ডাক্তার ও রূপচর্চা বিশেষজ্ঞের পরামর্শে হতে হবে। এর ফলে মুখ থেকে দুশ্চিন্তার ছাপ দূর হবে, চুল পড়া বন্ধ হবে। বাইরে গেলে অবশ্যই সানস্ক্রিণ লোশন ব্যবহার করতে হবে। রাতে একটা আই ক্রিম অবশ্যই লাগাবেন। চুলে তেল দেয়ার অভ্যাস না থাকলে করে নিন। সপ্তাহে অন্তত ২ দিন তেল মাখার চেষ্টা করবেন।

সব মিলিয়ে বিয়ের আগে আপনি ফিট ও আরও সুন্দর হয়ে উঠবেনই। সুযোগ থাকলে অবশ্যই একজন ভালো পরামর্শকের শরণাপন্ন হতে পারেন। জীবনে বিয়ের মুহূর্তা অনেক মূল্যবান। মূল্যবান সময়ের মূল্য দেয়া আমাদের সবার দরকার। তবেই জীবন হবে সুখে সুখময়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *