চীনের নদীতে বাঁধ, হুমকিতে ভারত, বাংলাদেশসহ ভাটির দেশগুলো

চীনের ইয়ারলুং সাংপো নদীতে বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করে ভারতসহ এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে দেশটি। নির্মিত ‘মটুও মেগা-ড্যাম’ নামের এ প্রকল্পটি ৬০ হাজার মেগাওয়াওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন।

সাংপো নদীর জল গড়িয়ে ভারতে এসে তা ব্রহ্মপুত্র নাম ধারণ করেছে। ভারতের উদ্বিগ্নের কারণ হলো এই বাঁধটির কারণে চীন ব্রহ্মপুত্রের পানি নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা অর্জন করেছে। এটি ভারত, বাংলাদেশ, ভুটান ও বাংলাদেশসহ এশিয়ার অনেকগুলোর দেশের প্রায় ১.৮ বিলিয়ন মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

এই মেগা ড্যামটি সাংপোর পানি নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেকগুলো সিরিজ বাঁধ নির্মাণ করেছে চীন। এর ফলে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে এবং ভাটির দেশগুলো বর্ষায় অনাকাঙ্খিত বন্যা দেখা দেবে।

আরও দেখুন

প্রশান্ত মহাসাগরের ১০টি গোপন রহস্য
নীল শহর ও তার গল্প
আফগান যুদ্ধ ও দখলের ইতিবৃত্ত

এমন পরিস্থিতিতে ভারত অরুণাচলের সিায়ং জেলার সিয়াং নদীতে ১১ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রস্তাব দেয় চীনকে। এই বাঁধের নকশায় একটি ৯ বিলিয়ন কিউবিক মিটারের রিজার্ভারও রাখা হয়েছে।

ভারতের উদ্দেশ্য একটি নদীপ্রধান রাজ্যের পানিবণ্টন অধিকারকে শক্তিশালী করা। কারণ এই প্রকল্পের সুবাদে চীন বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দিলেও নিম্নধারার অঞ্চলগুলোর জন্য রিজার্ভারটি একটি বাফার হিসেবে কাজ করবে।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালে কোন পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই তিন সপ্তাহের জন্য মেকং নদীর পানি প্রবাহ প্রায় ৫০ শতাংশ কমিয়ে দেয়। বিদ্যুৎলাইন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পানি নিয়ন্ত্রণের এ ঘটনাটি দৃশ্যমান ছিলো। এর ফলে কম্বোডিয়া, লাওস, মায়ানমার, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের লাখ লাখ মানুষ পানি সঙ্কটে ভোগে।

এর আগে ২০১৯ সালে মেকং নদীর উপরিভাগে রেকর্ড পরিমাণ পানি ধরে রেখেছিলো চীন। ফলস্বরূপ ভাটির দেশেগুলো ব্যাপক খরার সম্মুখীন হয়েছিলো। এ সময় থেকে থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া ও ভিয়েতনামে গুরুতর এবং দীর্ঘায়িত খরা দেখা দিয়েছিলো।

চীনের এমন আচরণ ভূ-রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে দেখছে সম্ভাব্য ক্ষতির সম্মুখীন দেশগুলো। এর আগেও ২০১৬ সালে ব্রহ্মপুত্রের পানি প্রবাহে বাধা দেয় চীন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *