কুকুরের গ্রুমিং ব্যবসা করে লাখ টাকা আয়

কুকুরের গ্রুমিং ব্যবসা বর্তমানে এক আধুনিক ব্যবসার নাম। কুকুর পোষতে ভালোবাসে অনেকেই। সব দেশেই কমবেশি অনেক মানুষ বিড়াল, পাখি বা অন্যান্য পোষা পশু, পাখির মতো কুকুর পোষতে পছন্দ করেন। তবে প্রশিক্ষিত প্রাণী সবাই পুষে থাকেন না। সাধারণত বাড়িতে কুকুর বা বিড়াল রেখে দিলে তারা নিজে থেকেই কিছু বিষয়ে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন।

ইউরোপ আমেরিকার মানুষেরা প্রশিক্ষিত কুকুর বেশি পোষে থাকেন। সুন্দরভাবে বেড়ে একটি কুকুর তাদের কাছে বন্ধুর মতোই। আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন অনেক ভিডিও দেখে অবাক হই প্রভুভক্ত কুকুর কত কিছু করতে পারে। তাই সেসব দেশের জন্য প্রশিক্ষিত এবং সুন্দরভাবে বেড়ে উঠা একটি কুকুরের দাম অনেক।

আপনি কি একজন উদোক্তা? আপনি কি উদ্যোক্তা হতে চান? আপনি ইউরোপ আমেরিকার হলে এই বিজনেস আইডিয়াটি আপনার জন্য বেশ লাভজনক। ইতোমধ্যে আমরা জানি কুকুরের গ্রুমিং বিজনেস করছে অনেকেই। কুকুরের জন্য রয়েছে ডে-কেয়ার সার্ভিসসহ নানা ব্যবসায়িক সুযোগ। কুকুরের গ্রুমিং বিজনেস তার মধ্যে অন্যতম।

কুকুরের গ্রুমিং ব্যবসার জন্য একজন উদ্যোক্তার গুণ

কুকুরের গ্রুমিং ব্যবসা শুরু করার আগে এ ব্যবসা সম্পর্কে আপনাকে ভালোভাবে জানতে ও বুঝতে হবে। পরিস্কার ধারণা থাকতে হবে এ ব্যবসা কিভাবে পরিচালনা করতে হবে এবং এর পরিধি কতটুকু হবে। কুকুরের গ্রুমিং ব্যবসার জন্য একজন উদ্যোক্তা হিসেবে আপনি কিভাবে প্রস্তুতি নেবেন? আপনি কি জানেন এই ব্যবসার একজন্য উদ্যোক্তার কি কি গুণ থাকা দরকার? চলুন জেনে নিই।

  • আবেগ: একজন গ্রোমার হিসেবে প্রথমেই যে গুণটি থাকতে হবে তা হলো আবেগ। পোষা কুকুরের প্রতি আবেগ, ভালোবাসা না থাকলে তার যত্ন করা সম্ভব হবে না। এটি একজন উদ্যোক্তার ভিত্তি। যদি কোন উদ্যোক্তার আবেগ না থাকে তবে সকাল সকাল ঘুম থেকে কুকুর ছানার প্রতি বিভিন্ন কর্তব্য করতে পারবে না। তাই প্রথমেই থাকতে হবে আবেগ। এর ফলে কুকুরের খুঁটিনাটি বিভিন্ন বিষয়ের দিকে তার নজর থাকবে। কুকুরের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা সঠিক যত্ন নিতে এবং আপনার ব্যবসায়িক পরিষেবা প্রদানে আপনাকে আরও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করে তোলবে।
  • গ্রুমিং স্কিল: অবশ্যই একজন কুকুরের গ্রুমিং ব্যবসায়ীর গ্রুমিং করানোর মতো দক্ষতা থাকতে হবে। কিভাবে কুকুরের গ্রুমিং করাতে হয় সে বিষয়ে বাস্তবিক জ্ঞান না থাকলে কাজটি করা সম্ভব নয়। এতে ব্যবসায়ের সুনাম নষ্ট হবে, আপনার প্রতি ক্লায়েন্টের আস্থা কমবে। তাই ব্যবসা শুরু করার আগে কুকুরের গ্রুমিংয়ের বিভিন্ন কৌশল আপনাকে আয়ত্ত্ব করতে হবে।
  • কাস্টমার সার্ভিস: আপনি যখন কুকুরের গ্রুমিং সার্ভিস দেবেন তখন আপনার অনেক গ্রাহক বা কাস্টমার থাকবে। কাস্টমারের সাথে যোগাযোগ, তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর এবং তাদের চাহিদা বুঝতে হবে। কাস্টমারকে আপনার সেবা সম্পর্কেও সহজ ও পরিস্কার ভাষায় বুঝাতে হবে। তাদের সাথে সম্পর্ক ভালো রাখতে অবশ্যই সুন্দর ব্যবহার করতে হবে। এর ব্যতিক্রম হলে ব্যবসার ক্ষতি হবেই।
  • ব্যবসা পরিচালনার দক্ষতা: আপনি যদি একজন ভালো গ্রোমার হন তাহলে কুকুরের গ্রুমিং খুব ভালো করতে পারবেন এতে কোন সন্দেহ। ভালো গ্রুমিং করলেই কুকুরের গ্রুমিং ব্যবসা ভালো করতে পারবেন এর কোন নিশ্চয়তা নেই। তাই একজন উদ্যোক্তা হিসেবে অবশ্যই আপনার ব্যবসা পরিচালনার দক্ষতা থাকতে হবে। ইনভেন্টরি, হিসাবরক্ষণ, মার্কেটিং, কর্মী ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়ে অবশ্যই একজন উদ্যোক্তার ব্যবসা পরিচালনার দক্ষতা থাকতে হবে।
  • স্বাস্থ্যবিধি ও নিরাপত্তার জ্ঞান: কুকুর একটি গৃহপালিত পশু। তার কোন সমস্যা হলে মানুষের মতো কখনো বলতে পারে না তবে বিভিন্নভাবে বুঝাতে পারে। একটি কুকুরের মালিক যখন তার গ্রুমিংয়ের দায়িত্ব একজন উদ্যোক্তা দেয় তখন কুকুরের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার সার্বিক দায়িত্বও গ্রুমিং ব্যবসায়িকেই পালন করতে হয়। তাই কুকুরের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ, স্যানিটেশন ব্যবস্থা সম্পর্কে উদ্যোক্তার অবশ্যই যথেষ্ট জ্ঞান থাকতে হবে।
  • অভিযোজনক্ষমতা: অভিযোজনক্ষমতাকে সহজে বলতে গেলে বিষয়টি হলো মানিয়ে নেয়ার যোগ্যাতা। একজন উদ্যোক্তা যখন কুুকুরের গ্রুমিং ব্যবসা শুরু করবে তখন তাকে কুকুরের বিভিন্ন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের সাথে মানিয়ে নিতে হবে। কোন জাতের কুকুর খুব নরম স্বভাবের হবে, কোনটি হবে খুবই উগ্র। সব ধরণের কুকুরকে গ্রুমিং করানোর জন্য অবশ্যই ব্যবসায়িকে অভিযোজনক্ষমতা সম্পন্ন হবে হবে।
  • নেটওয়াকিং: এই ব্যবসা করতে গেলে অনেক সময় পশু চিকিৎসক, পশুর খাবারের দোকান, ওষুধের দোকান এবং অন্যান্য গ্রুমিং ব্যবসায়ীর সহযোগিতা দরকার হতে পারে। তাই প্রয়োজনীয় সকল সেক্টরের লোকেদের সাথে ভালো যোগাযোগ ও সম্পর্ক থাকতে হবে।
  • লাইসেন্সিং ও সার্টিফিকেশন: যে কোন ব্যবসা করতে গেলেই সাধারণত কিছু লাইসেন্স আবশ্যক। যেহেতু কুকুরের গ্রুমিং ব্যবসা একটু অন্য ধররে তাই এক্ষেত্রে দারকার হতে পারে কিছু বাড়তি ও প্রয়োজনীয় লাইসেন্স ও সার্টিফিকেট। স্থানীয় পশু অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, বীমা, নিরাপত্তা সনদসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় লাইসেন্স ও সার্টিফিকেট দরকার। এগুলো একেক দেশে একেক রকম। তাই একজন উদ্যোক্তাকে এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিজের সংগ্রহে রাখতে হবে। কুকুরের গ্রুমিং ব্যবসার ক্ষেত্রে এগুলো থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি যোগ্যতা বা গুণ।

কিভাবে শুরু করবেন কুকুরের গ্রুমিং ব্যবসা?

কুকুরের গ্রুমিং ব্যবসা শুরু করতে আপনার কিছু বেসিক বিষয় অবশ্যই মেনে চলতে হবে। অনেকের মতে অনেক ধাপে এই ব্যবসা শুরু করতে হয়। তবে গুরুত্বপূর্ণ কিছু ধাপ আছে যেগুলো অবশ্যকরণীয়। সে বিষয়ে নিচে কতগুলো ধাপ উল্লেখ করা হলো যেগুলো আপনাকে কুকুরের গ্রুমিং ব্যবসা শুরু করতে সহায়তা করবে।

ব্যবসার নাম কিভাবে নির্ধারণ করবেন?

নতুন কোন ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে নাম অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার। সহজ ও সুন্দর নাম না হলে তা ব্র্যান্ডিং করতে অনেক সমস্যা হয়। নামের সাথে ব্যবসার ধরণেরও একটি সম্পর্ক আছে। ব্যবসার নাম যদি অপ্রচলিত কোন শব্দে হয় তবে বুঝতে কাস্টমারদের অনেক সমস্যা হয়। আবার অনেক সময় দেখা যায় ব্যবসার নাম অনেক বড় হয়ে থাকে সেক্ষেত্রেও তা ব্র্যান্ডিং করা দু:সাধ্য হয়ে পড়ে। তাই যখন কুকুরের গ্রুমিং ব্যবসার কোন নাম ঠিক করবেন তা যেন যথাযথ হয়। সুন্দর ব্যবসার নাম নির্ধারণে কিছু বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। বিষয়গুলো হলো:

  • ব্যবসায়ের নামের বানান সহজ এবং বলতে সহজ হতে হবে।
  • সহজে মনে রাখা যায় এমন নাম নির্ধারণ করতে হবে।
  • আপনার ব্যবসার ধরন নির্দেশক (“কুকুর” এবং “গ্রুমিং” শব্দগুলি সহ বা তাদের প্রতিশব্দগুলি ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো হবে।)
  • নাম অবশ্যই ব্র্যান্ডের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।
  • ৫ থেকে ১০ অক্ষরের মধ্যে নাম নির্ধারণের প্রবণতা বর্তমানে সবচেয়ে বেশি। তাই নাম ছোট রাখতে এটি আপনিও করতে পারেন।
  • ব্যবসার নাম অবশ্যই অর্থপূর্ণ হতে হবে।
  • ব্যক্তির নামে ব্যবসার নামকরণ করা একদমই ঠিক হবে না।
  • প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের নাম অনুকরণ করবেন না।
  • ডোমেইন পাওয়া যায় এমন নাম নির্ধারণ না করলে অনলাইলে ব্যবসার ব্র্যান্ডিং করতে বেগ পেতে হবে।
  • ব্যবসার জন্য একটি ট্যাগ লাইন তৈরি করতে হবে।
  • ব্যবসার ধরণের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং অর্থবহ, থিমেটিক একটি লোগো ডিজাইন করতে হবে।

ব্যবসায়িক পরিকল্পনা

একটি লিখিত ব্যবসায়িক পরিকল্পনা যে কোন ব্যবসার ক্ষেত্রে অনেক বেশি ফলপ্রসূ। ব্যবসার কোন পরিস্থিতিতে কেমন সিদ্ধান্ত নেবেন সেক্ষেত্রে লিখিত পরিকল্পনা দারুণ সহায়ক। বিনিয়োগকারীদের আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতেও লিখিত ব্যবসায়িক পরিকল্পনা একটি সংবিধানের মতো কাজ করে। লিখিত আকারে যেসব বিষয় পরিকল্পনার অন্তর্ভূক্ত থাকতে পারে তার একটি তালিকা দেয়া হলো:

  • সারমর্ম
  • ইন্ডাস্ট্রি অ্যানালাইসিস (যে ব্যবসা করবেন বাজারে তার অবস্থা)
  • প্রতিযোগিতামূলক বিশ্লেষণ
  • বিপণন পরিকল্পনা
  • ব্যবস্থাপনা
  • কর্মকাণ্ড
  • আর্থিক পরিকল্পনা

ব্যবসায়িক সত্তা

ব্যবসায়ের একটি নিজস্ব সত্তা থাকতে হবে। আপনার ব্যবসাটি কি একক ব্যবসায়ী নাকি লিমিটেড কোম্পানী বা অংশীদারমূলক তা পরিস্কার করতে হবে। ব্যবসার নিজের পরিচয়ের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগে নিবন্ধন করতে হবে। ব্যবসার সত্তা (Identity) কয়েক ধরণের হতে পারে।

  • সীমিত দায় কোম্পানি (LLC)
  • কর্পোরেশন
  • একক মালিকানা
  • অংশীদারিত্ব

সার্ভিস নির্ধারণ

আপনি কি সার্ভিস দেবেন তা নির্ধারণ করতে হবে। কুকুরের গ্রুমিং ব্যবসার জন্য অনেক ধরণের সার্ভিস দেয়া যেতে পারে। নতুন উদ্যোক্তা হিসেবে একার পক্ষে সব ধরণের সার্ভিস দেয়া প্রায় অসম্ভব। সে কারণেই ব্যবসার শুরুতেই নির্ধারণ আপনার দক্ষতা অনুযায়ী কোন কোন সার্ভিসগুলো আপনি প্রদান করতে পারবেন। সাধারণত সব নতুন উদ্যোক্তারা কুকুরের গ্রুমিং ব্যবসার ক্ষেত্রে যে সার্ভিসগুলো দিয়ে থাকে তার একটি সম্ভাব্য তালিকা নিচে দেয়া হলো:

  • চোখ ও কান পরিষ্কার করা
  • দাঁত পরিষ্কার করা
  • নখ ছাঁটাই করা
  • লোমে শ্যাম্পু করা
  • চুল ছাঁটাই করা
  • শেভিং করা
  • ডি-ম্যাটিং
  • স্কিন থেরাপি
  • উকুন আছে কিনা তা খেয়াল রাখা

পুঁজি

ব্যবসা করতে গেলে অবশ্যই পুঁজি লাগবেই। একজন নতুন উদ্যোক্তা হিসেবে আপনার ব্যবসার জন্য কেমন পুঁজি লাগবে তা ব্যবসার ধরণ, আকার এবং প্রতিযোগিতামূলক বাজার বিবেচনায় নির্ধারণ করতে হবে। আপনি যেরকম সেবা দিবেন তার ভিত্তিতেই পুুঁজি কম বা বেশি লাগতে পারে।

গ্রুমিং উপকরণ

একটি কুকুরকে গ্রুমিং করার জন্য অনেক ধরণের উপকরণ লাগে। আপনি কুকুরের গ্রুমিং ব্যবসা শুরু করলে সব ধরণের উপকরণ নিয়েই শুরু করতে হবে। গ্রুমিং আসলে এক ধরণের প্রশিক্ষণের মতো। প্রশিক্ষণ করাতে গেলে যেমন অনেক উপকরণ দরকার হয় একইভাবে গ্রুমিংয়ের ক্ষেত্রেও অনেক উপকরণ দরকার। কুকুরের গ্রুমিং ব্যবসার জন্য যে যে উপকরণ দরকার হয়:

  • গ্রুমিং টেবিল
  • পশম শুকানোর ড্রায়ার
  • ওয়াশিং মেশিন এবং ড্রায়ার
  • স্নানের টব
  • ক্যানেল
  • গ্রুমিং মোজা (হাত ও পায়ের জন্য)
  • গোসলের শাওয়ার
  • কুকুরের ব্রাশ
  • চিরুনি
  • কাঁচি
  • গ্লাভস
  • গ্রুমিং ক্লিপার
  • নেইল ক্লিপার
  • নেইল গ্রাইন্ডার
  • শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার
  • কান পরিষ্কারের যন্ত্র
  • মুখের মাস্ক
  • হাতের স্যানিটাইজার
  • পরিচ্ছন্নতার সামগ্রী

সেবার মূল্য নির্ধারণ

এ পর্যায়ে কুকুরের গ্রুমিং ব্যবসার জন্য আপনার সার্ভিস হিসেবে তার মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। প্যাকেজ আকারে নির্দিষ্ট সময়সীমার জন্য মূল্য নির্ধারণ করতে পারেন। সার্ভিস ফি আলাদা হিসেবেও মূল্য নির্ধারণ করা যাবে। সেক্ষেত্রে কুকুরের খাবার, ওষুধ ও অন্যান্য বিষয়াদির ব্যয় কে প্রদান করবে, কিভাবে করবে তা স্পষ্ট করে নিতে হবে। ৩ মাস মেয়াদী গ্রুমিং, ৩ মাস মেয়াদী এরকম সময়ের মেয়াদেও আলাদা আলাদাভাবে মূল্য নির্ধারণ করতে পারবেন। প্রতিযোগী ব্যবসায়ীদের মূল্য, সেবার মান, ধরণ ইত্যাদির ভিত্তিতে প্রতিযোগিতামূলক মূল্য নির্ধারণ ব্যবসার জন্য লাভজনক হতে পারে।

প্রচারণা

ব্যবসার সামগ্রিক ফরমেশন সম্পন্ন হয়ে গেলে এবার শুরু করতে হবে প্রচারণা। যুগের কল্যাণে এখন অনলাইন এবং অফলাইন দুই মাধ্যমেই প্রচারণা চালানো যায়। ডিজিটাল বা এনালগ যে পদ্ধতিতেই প্রচারণা চালাবেন কিছু প্রমোশনাল উপকরণ আগে থেকেই তৈরি করে নিতে হবে।

অনলাইন প্রচারণার উপকরণ

  • সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জন্য ডিজিটাল পোস্টার
  • ডিজিটাল ব্যানার
  • ভিডিও বিজ্ঞাপন
  • অনলাইন ফ্রি ওয়েবিনার

অফলাইন প্রচারণার উপকরণ

  • দেয়ালে লাগানোর পোস্টার
  • ফ্লায়ার
  • পত্রিকায় বিজ্ঞাপন
  • বিলবোর্ড

সবকিছুর পর প্রচার প্রচারণা ঠিক থাকলে কুকুরের গ্রুমিং ব্যবসায় সফল হতে খুব বেশি সময় লাগে না। দিন দিন মানুষে মানুষে দূরত্ব বাড়ছে। মানুষের বাড়ছে একাকীত্ব। একটি প্রভু ভক্ত কুকুর মানুষকে সঙ্গও দিয়ে থাকে। সে কারণে সুন্দর গ্রুমিং করা, প্রশিক্ষিত কুকুরের চাহিদাও বাড়ছে। একজন উদ্যোক্তা হিসেবে এ ব্যবসায় লাভের আশা যে কেউ করতেই পারে।

কুকুরের গ্রুমিং ব্যবসা করে কত টাকা আয় করা যায়?

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে চিন্তা করলে কুকুরের গ্রুমিং ব্যবসা করে খুব বেশি আয় করা যাবে না। তবে খুব বেশি না হলেও লাখ টাকা আয় করা কোন ব্যাপারই নয়। তবে যেসব দেশের বেশিরভাগ বাড়িতেই এক বা একাধিক কুকুর থাকে সেসব দেশে এই ব্যবসা অনেক বেশি লাভজনক।

বাংলাদেশে এই ব্যবসা এখনও খুব বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেনি তাই প্রতিযোগিতা অনেক কম। এ অবস্থায় নতুন উদ্যোক্তা হিসেবে আপনি এ ব্যবসা শুরু করলে মাসে লাখ টাকা আয় করা কোন ব্যাপারই নয়। প্রথমত, আপনার প্রতিযোগি ব্যবসায়ীর সংখ্যা কম। দ্বিতীয়ত, আপনার কাস্টমার হবেন সমাজের এলিট শ্রেণীর মানুষ। তৃতীয়ত, শান্ত ও প্রশিক্ষিত কুকুর না হওয়ায় বাড়িতে আমরা সেভাবে কুকুর পোষতে অভ্যন্ত নই। চতুর্থত, একটি সুন্দর গ্রুমিং করা কুকুর আমাদের কিভাবে সহায়ক হতে পারে এ ব্যাপারে আমাদের বাস্তবিক ধারণা কম। এরকম আরও অনেক কারণেই বাংলাদেশে কুকুর গ্রুমিং করার ব্যবসাটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময়।

বাইরের দেশগুলোর কথা চিন্তা করলে অবাক হতে হয়। যুক্তরাজ্যের মতো দেশে কুকুরের গ্রুমিংয়ের জন্য ৪৫ পাউন্ড ঘণ্টা হিসেবে চার্জ করা হয়। আমেরিকায় ১৫ ডলার ঘণ্টা হিসেবে কুকুরের গ্রুমিং করা হয়। বার্ষিক চার্জ হিসেবে ৩০ হাজার ডলার থেকে ২ লাখ ডলার পর্যন্তও চার্জ করেন কেউ কেউ। বাংলাদেশের হিসেবে যা অনেক টাকা।

নতুন উদ্যোক্তা হিসেবে আপনি অন্তত একবার নিজেকে পরীক্ষা করেও দেখতে পারেন। এ পেশায় বাংলাদেশে আপনার প্রতিযোগি অনেক কম হবে। আপনি যদি বাজার তৈরি করতে পারেন তবে কুকুরের গ্রুমিং ব্যবসা করে লাখ টাকা আয় করা তো কোন ব্যাপারই নয় বরং আপনিই থাকবেন বাজারের শীর্ষে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *