সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় এক বছরে (জুলাই ২০২৩-জুলাই ২০২৪) পর্যন্ত প্রায় ৫৮৮ জন সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এমন সব ঘটনায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৫২ জন। ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন নিপীরণ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
এসময় সাম্প্রদায়িক সংঘাত ও সংঘর্ষ এড়াতে জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন ও সংখ্যালঘু বিশেষ সুরক্ষা আইন প্রণয়নসহ ৬দফা সুপারিশও তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত।
পবন্ধে বলা হয়েছে বিগত বছরগুলোতে ঘটে যাওয়া সহিংসতার ঘটনার তুলনায় ২০২৩-২৪ বছরের সহিংসতার ঘটনার খুব বেশি হেরফের হয়নি। গত এক বছরে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ৪৫টি হত্যাকণ্ড ঘটেছে। এ ছাড়া সাতজনের মরদেহ উদ্ধার (হত্যাকাণ্ড বলে প্রতীয়মান) হয়েছে।
এই সময়ে ১০ জনকে হত্যার চেষ্টা হয়েছে, ৩৬ জনকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে, ৪৭৯ জন হামলা ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার এবং ১১ জনের কাছে চাঁদা দাবি করা হয়েছে। বসতঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ১০২টি।
বসতবাড়ি ও জমি দখলের ঘটনা ঘটেছে ৪৭টি, বসতবাড়ি ও জমিজমা দখল ও উচ্ছেদের তৎপরতা ও হুমকির ঘটনা ঘটেছে ৪৫টি এবং ১১টি দেশত্যাগের বাধ্য করার চেষ্টা হয়েছে। দেবোত্তর, মন্দির ও গীর্জার সম্পত্তি দখল ও দখল চেষ্টার ১৫টি ঘটনা ঘটেছে।
শ্মশানভূমি দখল ও দখলের চেষ্টার ৭টি ঘটনা ঘটেছে, মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ৯৪টি ঘটনা ঘটেছে, প্রতিমা ভাঙচুর হয়েছে ৪০টি, গণধর্ষণ, ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টা হয়েছে ২৫টি, অপহরণ, নিখোঁজ ও জোরপূর্বক ধর্মান্তরকরণের ১২টি ঘটনা ঘটেছে এবং ধর্ম অবমাননার কল্পিত অভিযোগে আটজন আটক হয়েছে। এ ছাড়া জাতীয় নির্বাচনে ৩২টি ও স্থানীয় নির্বাচনে ৫টি সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটেছে।
সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক ও নির্মল রোজারিও, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ভিক্ষু সুনন্দ প্রিয়, কাজল দেবনাথ, বাসুদেব ধর ও সুব্রত চৌধুরী, সাংবাদিক নিখিল মানকিন, ইঞ্জিনিয়ার শুভদেব কর প্রমুখ।
আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখিত সংখ্যালঘু সম্প্রদানের ওপর নির্যাতন বন্ধের অঙ্গীকার বাস্তবায়নের সুপারিশ করা হয়। এ বিষয়ে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারের পতি আহ্বান জানায় পরিষদ।